সর্বশেষ

Thursday, 14 May 2020

রামায়ণ অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা মন্দোদরী | জানুন প্রাচীন ইতিহাস

রামায়ণ অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা মন্দোদরী | জানুন প্রাচীন ইতিহাস

দাবা, দাবার ইতিহাস, ভারতীয় খেলা
গুজরাতের লোথাল থেকে খনন করে পাওয়া দাবার বোর্ড

চতুরঙ্গ বা দাবা একটি প্রাচীন ভারতীয় কৌশল-ভিত্তিক খেলা যার আধুনিক কিছু সংস্করণের মধ্যে বোর্ডভিত্তিক খেলা দাবা, সোগি, মাকরুক প্রভৃতি প্রধান। এটি 'চতুর' শব্দটি থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়, যার অর্থ বুদ্ধিমত্তাধারী / বুদ্ধিমান; আবার 'চার' থেকে 'চতুর' এবং 'দিক' থেকে 'অঙ্গ' যোগে 'চতুরঙ্গ' (চারদিকে গমন-যোগ্য) কথাটির উদ্ভব বলেও অনেকে মনে করেন।


চতুরঙ্গ বা দাবা শুরুর অবস্থায় 'রাজা'রা মুখোমুখি অবস্থানে থাকে না; সাদা রাজার অবস্থান থাকে e1 ঘরে এবং কালো রাজার অবস্থান থাকে d8 ঘরে। }}
দাবা, দাবার ইতিহাস, ভারতীয় খেলা
দাবা খেলারত শ্রীকৃষ্ণ ও রুক্মিণী (হস্তঅঙ্কিত চিত্র)



গুপ্ত শাসনামলে, ৬ষ্ঠ শতকের কাছাকাছি সময়ে, ভারতে চতুরঙ্গ খেলার উদ্ভব ঘটে। পারসিয়ান সসনিয়ন শাসনামলে, ৭ম শতকে, এটি শতরঞ্জী খেলা হিসাবে পরিবর্তিত হয়; যা মধ্যযুগে ইউরোপে গিয়ে বর্তমান 'দাবা' খেলায় পরিণত হয়। কিন্তু ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ অনুসারে লঙ্কার রাক্ষস রাজা রাবণের রাজমহিষী বা স্ত্রী মন্দোদরীকে চতুরঙ্গ বা দাবা খেলার জনক বলা হয়েছে।


চতুরঙ্গ খেলার সঠিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে কিছু জানা যায় না; তবে দাবা খেলা বিষয়ক গবেষকগণ অনুমান করেন যে এটি মূলত: এর উত্তরাধিকারী খেলা শতরঞ্জীর মতো একই ধরনের নিয়মানুসারে খেলা হতো। তবে, সুনির্দিষ্টভাবে বললে, এর 'গজ' (হাতি)-এর চাল সমূহ ছিলো অনিশ্চিত ধরনের, যা আধুনিক দাবায় 'বিশপ'-এর চালের অগ্রদূত হিসাবে বিবেচনা করা যায়।



তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া

Wednesday, 11 March 2020

মানবজীবনের আদর্শ পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র

মানবজীবনের আদর্শ পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র

মানবজীবনের আদর্শ পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র


"ভগবন্‌, ত্রিভুবন তোমাদের প্রত্যক্ষে বিরাজে-
কহ মোরে কার নাম অমর বীণার ছন্দে বাজে।
কহ মোরে বীর্য কার ক্ষমারে করে না অতিক্রম,
কাহার চরিত্র ঘেরি সুকঠিন ধর্মের নিয়ম
ধরেছে সুন্দর কান্তি মাণিক্যের অঙ্গদের মতো,
মহৈশ্বর্যে আছে নম্র, মহাদৈন্যে কে হয় নি নত,
সম্পদে কে থাকে ভয়ে, বিপদে কে একান্ত নির্ভীক,
কে পেয়েছে সব চেয়ে, কে দিয়েছে তাহার অধিক,
কে লয়েছে নিজশিরে রাজভালে মুকুটের সম
সবিনয়ে সগৌরবে ধরামাঝে দুঃখ মহত্তম-
কহ মোরে, সর্বদর্শী হে দেবর্ষি, তাঁর পুণ্য নাম।
নারদ কহিলা ধীরে, অযোধ্যায় রঘুপতি রাম।"



বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ভাষা এবং ছন্দ কবিতায় এভাবেই অসাধারণ পদলালিত্যে প্রকাশ করেছেন ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের শ্রেষ্ঠতম পুরুষোত্তমের বিভূতি। কবিগুরুর বাল্মীকি চরিত্রের মুখ দিয়ে কবিগুরুই যেন আমাদের বলছেন-
"জানি আমি জানি তাঁরে, শুনেছি তাঁহার কীর্তিকথা"-
কহিলা বাল্মীকি, তবু, নাহি জানি সমগ্র বারতা,
সকল ঘটনা তাঁর- ইতিবৃত্ত রচিব কেমনে।
পাছে সত্যভ্রষ্ট হই, এই ভয় জাগে মোর মনে।"


যেখানে মহাকবি বাল্মীকি বলেছেন, শ্রীরামচন্দ্র সম্পর্কে সকল কিছু জেনেও তিনি কিছুই জানতে পারেননি ; সেই মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রের মাহাত্ম্যকথা আমরা সাধারণজন কি করে প্রকাশ করবো? কিন্তু বর্তমানে আমরা খুবই ব্যথিতচিত্তে লক্ষ্য করি অনেকেই হয়তো ব্যক্তিগত জীবনে সফল, কিন্তু এর মানে এ নয় যে আমরা সকল বিষয়েই জ্ঞানী। স্কুল কলেজে তো রামায়ণ-মহাভারত বিষয়ে পড়াশুনার সুযোগ নেই ; এর পরেও রামায়ণ-মহাভারত সম্পর্কে সামান্য বিদ্যা নিয়েই, বা কদাচিৎ ক্ষেত্রে না পড়েই আমরা রামায়ণ-মহাভারতের পিণ্ডী চটকাতে চটকাতে নিজেদের পাণ্ডিত্য জাহির করতে শুরু করে দেই। মূল চব্বিশ হাজার শ্লোকের রামায়ণ, অথবা একলক্ষ শ্লোকের মহাভারত হয়তো আমরা কখনো চোখেই দেখিনি। আমরা ইউরোপীয় মুখস্থ তোতাপাখির বিদ্যা দিয়ে সকলকিছুই দেখতে যেয়ে অনেক সময় অনেক অমার্জনীয় ভুল করে ফেলি। এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের উদ্দেশ্য করে অনেক আগেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করে রামায়ণ-মহাভারত যে ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস এবং সত্য ইতিহাস সে কথা স্মরণ করে আমাদের পথের দিশা দিয়েছেন। কবিগুরু বলেছেন-


" শতাব্দীর পর শতাব্দী যাইতেছে কিন্তু রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে আর লেশমাত্র শুষ্ক হইতেছে না। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে তাহা পঠিত হইতেছে, মুদির দোকান হইতে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত সর্বত্রই তাহার সমান সমাদর। ধন্য সেই কবিযুগলকে, কালের মহাপ্রান্তরের মধ্যে যাঁহাদের নাম হারাইয়া গেছে, কিন্তু যাঁহাদের বাণী বহুকোটি নরনারীর দ্বারে দ্বারে আজিও অজস্রধারায় শক্তি ও শান্তি বহন করিতেছে, শত শত প্রাচীন শতাব্দীর পলিমৃত্তিকা অহরহ আনয়ন করিয়া ভারতবর্ষের চিত্তভূমিকে আজিও উর্বরা করিয়া রাখিতেছে।
এমন অবস্থায় রামায়ণ-মহাভারতকে কেবলমাত্র মহাকাব্য বলিলে চলিবে না, তাহা ইতিহাসও বটে; ঘটনাবলীর ইতিহাস নহে, কারণ সেরূপ ইতিহাস সময়বিশেষকে অবলম্বন করিয়া থাকে—রামায়ণ-মহাভারত ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস। অন্য ইতিহাস কালে কালে কতই পরিবর্তিত হইল, কিন্তু এ ইতিহাসের পরিবর্তন হয় নাই। ভারতবর্ষের যাহা সাধনা, যাহা আরাধনা, যাহা সংকল্প, তাহারই ইতিহাস এই দুই বিপুল কাব্যহর্ম্যের মধ্যে চিরকালের সিংহাসনে বিরাজমান।"
( দীনেশচন্দ্র সেন রচিত 'রামায়ণী কথা'র পূর্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভূমিকা )

সাহিত্য বিচারে, রামায়ণ পৃথিবীর প্রধান চারটি ক্লাসিক মহাকাব্যের প্রাচীনতম একটি মহাকাব্য। এবং
আধ্যাত্মিক, দার্শনিক এবং নীতিশাস্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে, রামায়ণ একটি সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন দর্শনের দীপ্তময় শাস্ত্র। প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ভৌগলিকভাবে রামায়ণ একটি অভ্রান্ত গ্রন্থ । রামায়ণের অযোধ্যা, কিষ্কিন্ধ্যা, চিত্রকূট, লঙ্কা, সরজু নদী সহ সকল স্থানই ভৌগলিকভাবে বর্তমানে সেই সেই স্থানে অবস্থিত থেকে রামায়ণের কালের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য আজও বহন করে চলছে।
রামায়ণ শুধুমাত্র কাল্পনিক কাহিনী নয়, রামায়ণ হলো এই ভূখণ্ডের প্রাচীন ইতিহাস। এর অন্যতম পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণ হলো রামসেতু, যা ভগবান শ্রীরামচন্দ্র লঙ্কায় পৌঁছানোর জন্য বানরসেনার সহায়তায় তৈরি করেছিলেন ; আজও তাঁর পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রামসেতু অক্ষত আছে। NASA-এর বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন সেতু এটি এবং এটি কোন প্রাকৃতিক সেতু নয়, সর্বপ্রাচীন এবং সর্ববৃহৎ মানবসৃষ্ট সেতু
কি নেই রামায়ণে? এ যেন একটি বিশ্বকোষ। রামায়ণের এ বিশ্বকোষ নির্মিত হয়েছে এক মর্যাদা পুরুষোত্তম দেব চরিত্রের উদ্বোধনে ; সেই দেব চরিত্রের নাম শ্রীরামচন্দ্র। যিনি শ্রীভগবানের অবতার রূপ পরিগ্রহ করে আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, আদর্শ পরিবার কেমন হবে? আদর্শ দাম্পত্যজীবন কেমন হবে? আদর্শ সমাজ কেমন হবে? আদর্শ ভ্রাতৃত্ব কেমন হবে? আদর্শ সন্তান কেমন হবে? আদর্শ বন্ধুত্ব কেমন হবে? এ সকল আদর্শের একমাত্র দীপ্তিময় আদর্শরূপ হলেন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র।


আজ ভগবান রামচন্দ্র বা রামায়ণের প্রসঙ্গ আসলেই কিছু মানুষ রামায়ণের উত্তরকাণ্ডের শম্বুক হত্যার প্রসঙ্গ নিয়ে এসে রামচন্দ্রের চরিত্রে কালিমালিপ্ত করতে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে বলতে চাই - বর্তমানে প্রাপ্ত রামায়ণে উত্তরকাণ্ডের অনেকটাই প্রক্ষিপ্ত। সেখানে শম্বুকবধের কাহিনীটি যে প্রক্ষিপ্ত, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর সবচেয়ে বড় প্রমান হলো- রামায়ণের বালকাণ্ডে ১ম এবং ৩ য় সর্গে দুটি সূচিপত্র পাওয়া যায় ; প্রথম সূচিপত্রে নারদের মুখে সমগ্র রামচরিত সংক্ষেপে বর্ণিত, কিন্তু সেখানে উত্তরকাণ্ডের অথবা তার শম্বুকবধের কোন কথাই নেই। অর্থাৎ শম্বুকবধ পরবর্তীকালে কোন বর্ণবাদী দ্বারা সংযোজিত। যে রামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলেন নিষাদরাজ গুহক, যিনি বর্তমান জাতপাতের পরিভাষায় হলেন শূদ্র। যেই রামচন্দ্র শূদ্র কুলোদ্ভূত শবরীর মুখের এঠো ফল খেয়েছেন ; সেই রামচন্দ্র কি করে শুধুমাত্র তপস্যার কারণে একজন শূদ্রকে হত্যা করবেন? এ কি বিশ্বাসযোগ্য? এরকম অসংখ্য মিথ্যাচার ছড়ানো আছে রামায়ণকে কেন্দ্র করে, যার সুফল নিচ্ছে ভারতবর্ষের বিরোধী, হিন্দুবিরোধী কিছু সাম্প্রদায়িক ইতিহাসবেত্তারা। তাই আমাদের নতুন প্রজন্মের উচিত এ সকল মিথ্যাচারকে অপনোদন করে প্রকৃত ইতিহাসের গতিপথকে অক্ষুণ্ণ রাখা।
বহু বছরের বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতা আমাদের এদেশীয় সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় মূল্যবোধগুলোকে আমাদের মন থেকে মুছে দেয়ার অপচেষ্টা করেছে, যার ফলে শিক্ষিত শ্রেণীর আমরা অনেকেই আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে ঘৃণা করতে শিখেছি। এ ঘৃণা এবং অবজ্ঞাই আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাভিমানকে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে৷ কিছু তথাকথিত বামপন্থী এবং সেকুলার নামধারী বুদ্ধিজীবীদের দ্বিচারিতা আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐক্যবদ্ধ চিন্তাকে বিভ্রান্ত করে চলছে৷ এ তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা শ্রীরামের অস্তিত্ব এবং কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও, রাবণ তাদের কাছে মহিমান্বিত মহান। রাম-রাবণের শুভ-অশুভের দ্বন্দ্ব তাদের তথাকথিত গবেষণার পরিভাষায় হলো, অনার্যদের উপরে আর্যদের আগ্রাসন! অাশ্চর্যের বিষয়, আজও এই দ্বিচারীদের বিভিন্নভাবে জ্ঞানত বা অজ্ঞানত সমর্থন যুগিয়ে চলেছে কিছু বোধশক্তিহীন, আত্মকেন্দ্রিক কুলাঙ্গার।
ভারতবর্ষের সকল ভাষাতে তো বটেই, তিব্বত, চীন, ফিলিপাইন, বার্মা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডীয়া, লাওস সহ এশিয়ার সকল জনপদে প্রচলিত আছে রামায়ণ বিভিন্ন নামে।


জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন ধর্ম, ন্যায় এবং কর্তব্য পালনের এক জাজ্বল্যমানতার পরাকাষ্ঠা। তাই তিনি সকল মানবের আদর্শ, মর্যাদা পুরুষোত্তম। তিনি পিতৃসত্য রক্ষার জন্যে চৌদ্দবছর বনবাস সহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্ম পালনে ছিলেন আপোষহীন। সাধু সজ্জনের কাছে তিনি ছিলেন কুসুমের মত কোমল, আবার দুর্জ্জন অধর্মের বিনাশে তিনি নির্মম বজ্রধর । রামায়ণের অসংখ্য স্থানে ধর্মের মাহাত্ম্য এবং অধর্মকে বিনাশ করে ধর্মের শরণে থাকার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
ধর্মাদর্থঃ প্রভবতি ধর্মাৎ প্রভবতে সুখম্।
ধর্মেণ লভতে সর্বং ধর্মসারমিদং জগৎ।।
(অরণ্যকাণ্ড : ৯.৩০)


"ধর্ম হতেই অর্থ এবং প্রভাব আসে, ধর্ম থেকেই সুখ উৎপন্ন হয়।ধর্মের দ্বারাই জগতে সকল অভীষ্ট বস্তুর লাভ হয় ; সুতরাং এ জগতে ধর্মই প্রকৃত সারবস্তু। তাই সকলেরই ধর্মের শরণে থাকার সর্বদা চেষ্টা করা উচিত।"
ভগবান শ্রীরামচন্দ্র আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, ধর্মরক্ষার্থে শুধুমাত্র তথাকথিত ধর্ম পালন নয়; ধর্মরক্ষার জন্য অধর্ম, পাশবিক শক্তির সাথে নিরন্তর সংগ্রাম করাটাও আবশ্যক। তাই আজও ভগবান শ্রীরামচন্দ্রই সকল হিন্দুর আদর্শ, জীবনের ধ্রুবতারা। তাঁর আবির্ভাব তিথি শ্রীরামনবমী তাই আমাদের কাছে ক্ষাত্রশক্তি জাগরণের তিথি


আজ হিন্দু সাধুসন্ন্যাসী, ধর্মগুরু এবং বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের সর্বাগ্রে কর্তব্য, ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জীবনের ধর্মরক্ষার্থে অধর্ম বিনাশের শিক্ষাকে তাঁদের শিষ্য, অনুগামীদের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরা৷ রামায়ণে বর্ণিত শ্রীরামচরিতের বর্তমান যুগোপযোগী প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা করে সমাজ জাগরণের নূতন পথের উন্মেষ এখন সময়ের দাবী৷ দেশে দেশে হিন্দু আজ অত্যাচারিত, নিপীড়িত৷ হিংস্র বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসনে স্বভূমিতেই হিন্দুর অস্তিত্ব আজ বিপন্ন৷
আমাদের সামনে আদর্শের প্রয়োজন, পরিবার, সমাজ, সংসারে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের মত আদর্শিক মানবের প্রয়োজন। তাইতো মহর্ষি বাল্মিকী রামায়ণের শুরুতেই ত্রিলোকদর্শী দেবর্ষি নারদের কাছে জানতে চান, "জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ ধার্মিক, গুণবান এবং ধর্মরক্ষক কে?" এ প্রশ্নটিকে উপলক্ষ করে নারদ বাল্মিকীকে মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রের প্রায় সকল গুণাবলি ব্যক্ত করেন। মহর্ষি নারদ বলেন:
"বাল্মিকী তুমি যে-সমস্ত গুণের কথা উলেখ করলে তা সামান্য মানুষের মধ্যে সুলভ না। এমন গুণবান মনুষ্য এ পৃথিবীতে কে আছেন, এক্ষণে আমি তা স্মরণ করছি, তুমি শ্রবণ কর। শ্রীরাম নামে ইক্ষ্বাকুবংশীয় সুবিখ্যাত এক নরপতি আছেন। তাঁর বাহুযুগল আজানুলম্বিত, স্কন্ধ অতি উন্নত, গ্রীবাদেশ রেখাত্রয়ে অঙ্কিত, বক্ষঃস্থল অতি বিশাল, মস্তক সুগঠিত, ললাট অতি সুন্দর, নেত্ৰ আকৰ্ণবিস্তৃত ও গাত্রবর্ণ স্নিগ্ধ। তিনি নাতিদীর্ঘ ও নাতিহ্রস্ব; তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রমাণানুরূপ ও বিরল। সেই সর্বসুলক্ষণসম্পন্ন সর্বাঙ্গসুন্দর মহাবীর শ্রীরাম অতিশয় বুদ্ধিমান ও সদ্বক্তা। তিনি ধর্মজ্ঞ, সত্যপ্রতিজ্ঞ, বিনীত ও নীতিপরায়ণ; তাঁর চরিত্র অতি পবিত্র; তিনি যশস্বী, জ্ঞানবান, সমাধিসম্পন্ন, সকল জীবের প্রতিপালক এবং সর্বোপরি স্বধর্মের রক্ষক। তিনি আত্মীয়স্বজন সকলকেই রক্ষা করছেন। তিনি প্রজাপতিসদৃশ ও শত্রুনাশক। তিনি শরণাপন্নদের সর্বদা আশ্রয় দেন। তিনি বেদ-বেদাঙ্গে পারদর্শী, ধনুর্বিদ্যাবিশারদ, মহাবীর্য্যশালী, ধৈর্যশীল ও জিতেন্দ্রিয়। তিনি বেদাদি সর্ব শাস্ত্ৰজ্ঞ, প্রতিভাসম্পন্ন ও স্মৃতিশক্তি-যুক্ত। সকলেই তাঁর প্রতি প্রীতি প্রদর্শন করে থাকে। তিনি অতি বিচক্ষণ, সদাশয় ও তেজস্বী। নদীসকল যেমন মহাসাগরকে সেবা করে, সেইরূপ সাধুগণ সততই তাঁর সেবা করে থাকে। তিনি শত্ৰু-মিত্রের প্রতি সমদর্শী এবং অতিশয় প্রিয়দর্শন। সেই কৌশল্যাগর্ভসম্ভূত লোকপূজিত রাম গাম্ভীর্য্যে সমুদ্রের ন্যায়, ধৈর্যে হিমাচলের ন্যায়, বলর্বীযে ভগবান বিষ্ণুর ন্যায়, সৌন্দর্যে চন্দ্রের ন্যায়, ক্ষমায় পৃথিবীর ন্যায়, ক্ৰোধে কালানলের ন্যায়, বদান্যতায় কুবেরের ন্যায় ও সত্যনিষ্ঠায় দ্বিতীয় ধর্মের ন্যায় কীর্তিত হয়ে থাকেন। এ সকল গুণের আধার যিনি, তিনিই হলেন অযোধ্যার রাজা দশরথের জ্যেষ্ঠ ও গুণ-শ্রেষ্ঠ পুত্র শ্রীরামচন্দ্র ।"


(বাল্মীকি রামায়ণ:আদিকাণ্ড, প্রথম সর্গ, ৮-১৯)
রামায়ণের অসংখ্য শিক্ষার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে দেশপ্রেম। রামায়ণে আমরা দেখি যখন রাবন বধের পরে লঙ্কা বিজিত হলো তখন লক্ষ্মণ রামচন্দ্রকে বললেন, - দাদা,এমন সুন্দর স্বর্ণময়ী লঙ্কা যখন বিজিত হয়েছে, তখন আমরা মাতৃভূমি অযোধ্যায় ফিরে না গিয়ে এখানেই রাজত্ব করতে পারি। তখন উত্তরে শ্রীরামচন্দ্র বলেন হীরকখচিত দীপ্তিময় এক উক্তি -
অপি স্বর্ণময়ী লঙ্কা ন মে রোচতে লক্ষণ।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।।

"লক্ষণ এই লঙ্কাপুরী যদিও স্বর্ণময়ী অতীব সুন্দরী, তবুও তা আমার কাছে রূচিকর নয়; কারণ জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও অধিকতর শ্রেষ্ঠ।"
তাই আমরা শ্রীরামচন্দ্রের ধর্মরক্ষা এবং দেশপ্রেমের আদর্শকে প্রত্যেকের জীবনে বাস্তবায়িত করার মানসে ; পৃথিবীর সকল আসুরিক শক্তিকে বিনাশ এবং শুভশক্তি, দৈবশক্তির উদ্বোধনে আমরা যেন প্রত্যেকেই আমৃত্যু কাজ করে যেতে পারি সেই দীপ্ত প্রেরণায় আসুন আমরা সকলেই সংঘবদ্ধভাবে সংকল্পবদ্ধ হই।


ওঁ রাং শ্রীরামচন্দ্রায় নমঃ
দশরথায় বিদ্মহে সীতাবল্লভায় ধীমহি।
তন্নো রামঃ প্রচোদয়াৎ।।
রামায় রামভদ্রায় রামচন্দ্রায় বেধসে।
রঘুনাথায় নাথায় সীতায়াঃ পতয়ে নমঃ।।

শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী
সহকারী অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ

Monday, 2 March 2020

ভারতের সাত বিখ্যাত শিবমন্দির এক সরলরেখায়! জানতে পড়ুন!

ভারতের সাত বিখ্যাত শিবমন্দির এক সরলরেখায়! জানতে পড়ুন!



 “আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে ভারতে তৈরি হয়েছিল অনেক মন্দির। দেবাদিদেব শিবের কতগুলো মন্দির এর মধ্যে বিখ্যাত। এইসব মন্দির তৈরির সময় না ছিল কোনও প্রযুক্তি, না ছিল স্যাটেলাইট। কিন্তু ভালোভাবে খুঁটিয়ে দেখলে অবাক হতে হয়, কারণ ভারতের সাতটি অতি প্রাচীন শিব মন্দির অবস্থান করছে একই সরলরেখায়। উত্তরে কেদারনাথ থেকে দক্ষিণে রামেশ্বরম অবধি রয়েছে এই সাতটি প্রাচীন মন্দির। এদের প্রত্যেকের দ্রাঘিমাংশ একই। এর সবকটিই ৭৯ ডিগ্রি ৪১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড পূর্বে অবস্থিত।”


   
বলা হয়, “যোগের হিসেবের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল এইসব মন্দির।”এর মধ্যে পাঁচটি শিব মন্দির প্রকৃতির পাঁচ উপাদানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।


যেমন- “থিরুভানাইকাভালের মন্দির জলের প্রতীক, থিরুভান্নামালাইয়ের মন্দির অগ্নির প্রতীক, কালহস্তী মন্দির হল জলের প্রতীক, ভূমির প্রতীক হল কাঞ্চীপুরম আর চিদম্বরম মন্দির আকাশের প্রতীক।”


→ একই দ্রাঘিমাংশে কোথায় অবস্থান করছে সাতটি বিখ্যাত শিবমন্দির নিচে তালিকা দেয়া হল :-

🔗১. কেদারনাথ মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(30.7352°, 79.0669)

(নিচে ছবি যুক্ত)

🔗২. কালেশ্বরম মুক্তেশ্বরা স্বামী মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(18.8110, 79.9067)

🔗৩. শ্রীকালহস্তী মন্দির – অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(13.749802, 79.698410)

🔗৪. কাঞ্চীপুরম একম্বরেশ্বর মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(12.847604, 79.699798)

🔗৫. তিরুভান্নামালাই আন্নামালিয়ার মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-(12.231942, 79.067694)

🔗৬. চিদাম্বরম নটরাজ মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(11.399596, 79.693559)

🔗৭. রামেশ্বরম রামনাথস্বামী মন্দির- অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ:-

(9.2881, 79.3174)

(নিচে ছবি যুক্ত)



  “সত্যিই এ এক মহা বিস্ময় নয় কি ?”


✅শেয়ার করে সকল সনাতনীর কাছে পৌছে দিন৷৷ 


Thursday, 20 February 2020

বাংলালিপির মূল উৎস পবিত্র বেদ ।

বাংলালিপির মূল উৎস পবিত্র বেদ ।

বাংলালিপির মূল উৎস পবিত্র বেদ ।


লিপি প্রাচীনকাল থেকেই এই ভূখণ্ডে প্রচলিত। বেদ-বেদাঙ্গের অসংখ্য স্থানে বর্ণ-লিপির কথা আছে। বর্ণের বিশুদ্ধ উচ্চারণ এবং প্রয়োগের জন্যেই তৈরি হয় প্রত্যেক বেদের সাথে যুক্ত শিক্ষা এবং প্রাতিশাখ্য গ্রন্থগুলি। বৈদিক এ গ্রন্থগুলিতে বর্ণ, স্বর, মাত্রা ইত্যাদির যথাযথ উচ্চারণ ও প্রয়োগবিধি লিপিবদ্ধ করা আছে।
ভারতবর্ষের পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণ হিসেবে প্রাচীনতম লিপি হলো সিন্ধুসভ্যতার আবিষ্কৃত লিপিমালা ( আনু : ৫০০০ -৩০০০ খ্রিস্ট পূর্ব)। যদিও এ সিন্ধুলিপি এখনো পুরোপুরি পাঠোদ্ধার করা যায়নি। অবশ্য ইদানীং অনেকে দাবি করছে তারা সিন্ধুলিপির পাঠোদ্ধার করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে ভারতবর্ষের অধিকাংশ ভাষার লিপিগুলো ব্রাহ্মীলিপি থেকে উৎপন্ন। যেমন- বাংলা, উড়িয়া, আসামী, ওঝা, কণাড়ী, গুজরাটী, গুরুমুখী, গ্রন্থম, তামিল, তেলুগু, তিব্বতী, নেপালী, মণীপুরী, সিংহলী, সিন্ধী ইত্যাদি প্রায় ৪২ টির অধিক ভারতীয় ভাষা। এছাড়া বার্মা, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের ভাষা সহ আরো অসংখ্য ভাষার লিপি ব্রাহ্মীলিপি থেকে জাত। অবশ্য ব্রাহ্মীলিপি ছাড়াও ভারতবর্ষে আরেকটি প্রধান লিপি হলো খরোষ্ঠী এবং খরোষ্ঠী ও গ্রীক লিপির মিশ্রণে ব্যকট্রিয় লিপি নামক একটা মিশ্রলিপি।
ব্রাহ্মীলিপি পারস্যের পূর্বাংশ থেকে তিব্বত হয়ে লাওস- ফিলিপানের প্রায় সকল লিপির জননী। বাংলালিপিরও জননী। আমাদের হাতে পাওয়া পুরাতাত্ত্বিক তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাহ্মীলিপি থেকে বাংলালিপির বিবর্তনের চিত্রটি তুলে ধরছি:


১. কোন অনির্ণীত সুদূর প্রাচীনকালে ব্রাহ্মীলিপির উৎপত্তি হলেও খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর পূর্বে কোন ব্রাহ্মীলিপির নিদর্শন আমরা পাই না। এর উদাহরণ প্রথম পরিলক্ষিত হয় অশোকলিপি বা মৌর্যলিপি।
২. ব্রাহ্মীলিপির বিবর্তনে দ্বিতীয় স্তর হলো কুষাণলিপি।এ ১০০ থেকে ৩০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কণিষ্ক, হুবিস্ক, বাসুদেব প্রভৃতি কুষাণ রাজাদের বিভিন্ন অনুশাসনে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
৩. এর পরে এ লিপিই উত্তরী ও দক্ষিণী নামে দুইপ্রকারে ভাগ হয়ে যায়। এর উত্তরীলিপিই পরবর্তিতে ৪-৫ম শতাব্দীতে এসে গুপ্তযুগে গুপ্তলিপিতে পরিনত হয়ে প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা পায়।
৪. ব্রাহ্মীলিপির বিবর্তনের ইতিহাসে গুপ্তলিপির পরে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায় কুটিললিপি। এ লিপি কোন রাজ বংশের প্রভাব ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতবর্ষের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পরে সাধারণজনের লিপিতে পরিণত হয়।


৫. বাংলালিপির বিবর্তনের চূড়ান্ত ধাপটি লক্ষ্য করা যায় একাদশ দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দে। সেন যুগের শেষ দিকে এসে লিপি পরিবর্তনের এই রূপরেখাটি আমাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। বারো শতকের পরে বাংলায় আর কোনোও সেরকম উল্লেখযোগ্য তাম্রলিপি পাওয়া যায়নি। ত্রয়োদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত বিভিন্ন পান্ডুলিপি পাওয়া যায়। এসব পান্ডুলিপি থেকে বাংলা লিপির পূর্ণাঙ্গ রূপ ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ পূর্ণাঙ্গ রূপটিই ষোড়শ, সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর পান্ডুলিপিতে এবং অভিলেখতে স্থায়ী রূপ পেয়ে বিদ্যাসাগরের এবং পঞ্চানন কর্মকারের হাত গলিয়ে আজ বর্তমানের বাংলা লিপি।


বাংলালিপির মূল উৎস পবিত্র বেদ





গত প্রায় ছয়শত থেকে হাজার বছর পূর্বে ব্রাহ্মীলিপি কুটিল লিপি হয়ে বাংলালিপির সুস্পষ্ট রূপটি দেখা যায় প্রাপ্ত বিভিন্ন লিপিতে। এ লিপিগুলির মধ্যে পাণ্ডুলিপি, রাজাদের অভিলেখ এবং মূর্তিলিপিও আছে। এর কিছু উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত দেয়া যায়:
ক. বিশ্বরূপসেনের সাহিত্য পরিষৎ লিপিতে বাংলালিপির দৃশ্যমান উপস্থিতি দেখা যায়।
খ. এরই ধারাবাহিকতায় বল্লালসেনের পুত্র লক্ষ্মণসেনের আনুলিয়া তাম্রশাসনে বাংলা লিপির ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়।
গ. ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দে ডোম্মনপালের সুন্দরবন তাম্রানুশাসন লিপিটি প্রায় পূর্ণাঙ্গ বাংলা অক্ষরেই উৎকীর্ণ।
ঘ. ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ত্রয়োদশ শতাব্দীর পান্ডুলিপি ‘বজ্রায়নেসাধনাঙ্গানিতে বাংলালিপির দৃশ্যমান উপস্থিতি দেখা যায়।
ঙ. চতুর্দশ শতকে রচিত বড়ুচন্ডীদাসের কাব্য যা ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামে বিখ্যাত, এ কাব্যে বাংলালিপির চূড়ান্তরূপটি সহযেই ধরা পরে।
চ. পঞ্চদশ শতাব্দীতে রচিত বৌদ্ধ সহজিয়াদের লেখা বোধিচর্যাবতারের পান্ডুলিপিতে বাংলা লিপির আরও পরিণত রূপ দেখা যায়।
ছ. বর্ধমান জেলার বেগুনিয়ায় গণেশ মন্দিরের দরজায় উৎকীর্ণ পনেরো শতকের লিপিতে বাংলালিপির পূর্ণাঙ্গরূপ পরিলক্ষিত হয়।
এছাড়া রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির সংগ্রহে রক্ষিত ‘পঞ্চরক্ষা’ ও ‘গূহ্যাবলীবিবৃতি’ প্রভৃতি পান্ডুলিপিতে বাংলা লিপির সুস্পষ্ট এবং পরিণত উপস্থিতি লক্ষ করা যায় এবং এভাবেই বিভিন্ন চড়াই-উৎড়াই পেড়িয়ে ব্রাহ্মীলিপি থেকে কুটিল লিপির ধারাবাহিকতায় আজ বাংলা লিপির উদ্ভব।
এ সাতসমুদ্র সেঁচাধন বাংলালিপির জন্যে, এ অক্ষরের জন্যে, এ ভাষার রক্ষার জন্যে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ১৯৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারীতে একরক্ত পলাশের ফাগুনের দিনে সালাম, বরকত,রফিক, জব্বার সহ সকল নাম না জানা অসংখ্য ভাষা শহিদ। মাতৃভাষা বাংলার পক্ষে পাকিস্তানী গণপরিষদে প্রথম দাবি উপস্থাপন করেছেন বাংলামায়ের কৃতিসন্তান ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। এভাবেই বাংলাভাষার রত্নাকর থেকে জন্ম নেয় বাঙালির জাতিয়তাবাদী চেননা। একটা স্বাধীন ভূখণ্ড, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলা ভাষা এবং লিপি পায় চিরস্থায়ী অক্ষয় স্বরূপ এক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। এ ভাষা আমাদের ভালবাসার ধন, গর্বের ধন।সাধক কবি অতুলপ্রসাদ সেনের ভাষায়-


"মোদের গরব, মোদের আশা
মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা!
কি যাদু বাংলা গানে!- গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,
(এমন কোথা আর আছে গো!)



গেয়ে গান নাচে বাউল, গান গেয়ে ধান কাটে চাষা।।
ঐ ভাষাতেই নিতাই গোরা, আনল দেশে ভক্তি-ধারা,
(মরি হায়, হায় রে!) "


শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী

Monday, 17 February 2020

হিন্দুত্ববাদী বইয়ের সমাহার | বাংলাদেশের সর্বত্র পাঠানো হবে।

হিন্দুত্ববাদী বইয়ের সমাহার | বাংলাদেশের সর্বত্র পাঠানো হবে।

হিন্দুত্ববাদী বইয়ের সমাহার


হিন্দুত্ববাদী বই যতই পড়ছি সত্য তথ্য, বল, ভক্তি শক্তি ততই বেড়েছে, বিপদ ততই কেটেছে আমার। তাই সবার বিপদ কেটে সর্ব বলবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ধরণের হিন্দুত্ববাদী বইসমূহ বেশি বেশি ছাপান, কিনুন, পড়ুন ও বিক্রী করুন।
যে বই পড়ে শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে শক্তি জাগে, যে বই পড়ে প্রচার না করে ঘরে বেঁধে রাখা যায় না, যে বই পড়ে সহজেই অনন্ত সনাতন ধর্মের জ্ঞান ও আনন্দ লাভ হয়, যে সব বই বাংলাদেশের বাজারে সহজে পাওয়াও যায় না।
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের উদ্যোগে এ সকল গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো সেটহিসাবে বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে কুরিয়ার যোগে পাঠাছি। নিচে বইগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করা হলো।




আত্মঘাতী হিন্দু উত্তরণের পথ
লেখক-শ্রীপ্রীতীশ তালুকদার
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৮০ পৃষ্ঠা । মূল্য-৬৫ টাকা
মিথ্যার আবরণে দিল্লী আগ্রা ফতেপুর সিক্রি
লেখক-ড. রাধেশ্যাম ব্রহ্মচারী
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৭৬ পৃষ্ঠা     ।    মূল্য-১৩০ টাকা




সনাতন জীবনধারা
প্রকাশক- শ্রীকিরণ
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৮৪ পৃষ্ঠা । মূল্য-৬৫ টাকা
 ভণ্ডের ভগবান
লেখক-  মানস ভট্টাচার্য্য
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৪০ পৃষ্ঠা । মূল্য-৪৫ টাকা



পরম পবিত্র বেদসার সংগ্রহ
প্রকাশক- স্বামী অরুণানন্দ
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ২৪৪ পৃষ্ঠা । মূল্য-১৬০ টাকা
হিন্দুধর্মের সারতত্ত্ব
প্রকাশক- ড. শ্রীদুর্গাদাস বসু, সরস্বতী
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ২৫৬ পৃষ্ঠা । মূল্য-২০০ টাকা


আর্য সাম্রাজ্য সংগঠক শ্রীশ্রীকৃষ্ণ
প্রকাশক- স্বামী বেদানন্দ
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৩২ পৃষ্ঠা । মূল্য-৩৫ টাকা
জয়িষ্ণু হিন্দু
প্রকাশক- স্বামী বেদানন্দ
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৬০ পৃষ্ঠা । মূল্য-১২০ টাকা

পুরো সেটের মূল্য- ৮২০ টাকা + কুরিয়ার খরচ- ১০০ টাকা


অতিগুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর স্টক সীমিত। দয়া করে নিচে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে কল অথবা কমেন্ট বাক্সে মোবাইল নাম্বার,নাম, ঠিকানা প্রদান করে আপনার অর্ডারটি নিশ্চিত করতে পারেন।

অর্ডার মোবাইল নাম্বার- 01822890738

Sunday, 12 January 2020

পরমাত্মার রহস্য উদঘাটন।

পরমাত্মার রহস্য উদঘাটন।

পরমাত্মার রহস্য উদঘাটন।



প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ এখনো পরমাত্মার সম্পর্কে অবগত নয়। তাই তাদের জানানোর জন্য এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। নিচের রেফারেন্স সহ দেওয়া আছে।



এষ দেবো বিশ্বকর্মা মহাত্মা সদা জনানাং হৃদয়ে সন্নিবিষ্টঃ।
হৃদা মনীষা মনসাভিকপ্তো য এতদ্ বিদুরমৃতাস্তে ভবন্তি।।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-৪/১৭)


অনুবাদঃ এই বিশ্বকর্তা মহাত্মা পরমেশ্বর সর্বদা সমস্ত মানুষের হৃদয়ে সমগ্র রূপে অবস্থিত তথা হৃদয়দ্বারা বুদ্ধিদ্বারা এবং মনদ্বারা ধ্যানে আনীত হলে প্রত্যক্ষ হন, যে সমস্ত সাধক এই রহস্য জ্ঞাত হন তাঁরা অমৃতস্বরূপ হন।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-৪/১৭)

এই জীবাত্মার হৃদয়রূপ গুহায় স্থিত পরমাত্মা সূক্ষ্ম থেকে আরও সূক্ষ্ম আর বিরাট থেকেও অতি বিরাট আত্মার সেই মহিমা কামনারহিত আর শোকরহিত সর্বাশ্রয় পরমেশ্বরর কৃপাতে দেখতে পায়।
(কঠোপনিষদ্- ১/২/২০)(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-৩/২০)



এই পরমেশ্বরের বাস্তবিক স্বরূপ বিষয়াদির মতো প্রত্যক্ষ বস্তু রূপে স্থিত হয় না। এঁকে কেহ চর্মচক্ষু দ্বারা দেখতে পায় না, মনের দ্বারা নিবিষ্টচিত্তের ধ্যানের দ্বারা উপলব্ধ বিশুদ্ধ হৃদয় দ্বারা আর বিশুদ্ধ বুদ্ধিদ্বারা সেই পরমাত্মাকে দেখতে পাওয়া যায়। যাঁরা এঁকে জানেন তাঁরা অমৃতস্বরূপ হয়ে যান।
(কঠোপনিষদ্-২/৩/৯)
এই অনুবাদে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, ধ্যানে পরমাত্মাকে প্রত্যক্ষ করা যায়।
এই পরমাত্মাকে কেউ না উপর থেকে, না এদিক-ওদিক থেকে এবং না মধ্যভাগে পরিগ্রহণ করতে সক্ষম। যাঁর মহান যশ নাম আছে তাঁর কোনো উপমা নেই।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-৪/১৯)


এই পরব্রহ্ম পরমাত্মার স্বরূপ দৃষ্টিতে থাকে না, এই পরমাত্মাকে কেউ চক্ষুদ্বারা দেখে না। যে সমস্ত সাধক এই হৃদয়স্থিত অন্তর্যামী পরমেশ্বরকে হৃদয়ে তথা নির্মল মনদ্বারা এইরূপ জানেন তাঁরা অমৃতস্বরূপ অর্থাৎ জন্ম-মৃত্যুরূপ বন্ধন থেকে চিরতরে মুক্ত হন।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-৪/২০)
এই আত্মা না শাস্ত্রোক্ত বাক্যের ব্যাখ্যানের দ্বারা, বুদ্ধির দ্বারা নায়, বহুবার শুনেও বা বিদ্যার্জনের দ্বারা নয়, উপলব্ধিযোগ্য যাকে ইনি স্বীকার করেন তার দ্বারাই লাভযোগ্য কেননা এই আত্মা তার জন্য আপন যথার্থ স্বরূপ প্রকটিত করেন।
(কঠোপনিষদ্-১/২/২৩) (মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/২/৩)


কিন্তু এই অব্যক্ত প্রকৃতি, যা জীবাত্মা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, তার থেকেও এঁর যিনি অধীশ্বর পরমপুরুষ পরমাত্মা তিনি শ্রেষ্ঠ। তিনি নিরাকার রূপে সর্বত্র ব্যাপ্ত । তাকে জেনে এই জীবাত্মা প্রকৃতির বন্ধন থেকে মুক্তি লাভের জন্য জীবের উচিত পরব্রহ্ম পরমেশ্বরের শরণ নেওয়া। (গীতা-৯/৪)

পরমাত্মা যেদিন এই জীবের প্রতি করুণা পরবশ হয়ে মায়ার আবরণ সরিয়ে দেন, সেইদিনই তার পরব্রহ্মকে লাভ করা সম্ভব হয়। অন্যথায় এই মূঢ় জীব সর্বদা আপন অন্তরে থাকা সত্ত্বেও সেই পরমেশ্বরের স্বরূপ জানতে পারে না।
(#কঠোপনিষদ্-২/৩/৮)
জগতে কেউ ওই পরমাত্মার স্বামী নেই। তাঁর শাসক ও নেই এবং তাঁর চিহ্নবিশেষও নেই। তিনি সকলের পরম কারণ তথা সমস্ত করণের অধিষ্ঠাত্রীগণেরও অধিষ্ঠাতা কেউ এঁর জনক নেই এবং নেই স্বামী।
(শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ্-৬/৯)
সর্বত্র চক্ষুষ্মান তথা সর্বত্র মুখময়, সর্বত্র হস্তময় এবং সর্বত্র চরণময়, আকাশ এবং পৃথ্বীর স্রষ্টা তিনি একমাত্র পরমাত্মা। মনুষ্যাদি জীবগণকে দু-দুটি হাতে যুক্ত করেন তথা (পক্ষী-পতঙ্গদিকে) ডানাদ্বারা যুক্ত করেন।
(শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ্-৩/৩)(যজুর্বেদ-১৭/১৯)(অথর্ববেদ-১৩/২৬)(ঋগ্বেদ-১০/৮১/৩)
ওই পরমপুরুষ সহস্র মস্তকবিশিষ্ট সহস্র চক্ষুঃ বিশিষ্ট এবং সহস্র চরণবিশিষ্ট তিনি সম্পূর্ণ জগৎকে সর্বদিকে আবৃত করে নাভীর উর্ধ্বে দশাঙ্গুল পরিমিত হৃদয়দেশে অবস্থিত।(শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ্-৩/১৪)(যজুর্বেদ-৩১/১)(অথর্ববেদ-১৯/৬/৪)(ঋগ্বেদ-১০/৯০/১)

শ্রীরিগ্যান নাথ

Wednesday, 8 January 2020

জীবনের উদ্দেশ্য মুক্তিলাভ । জানুন মুক্তিলাভের উপায়।

জীবনের উদ্দেশ্য মুক্তিলাভ । জানুন মুক্তিলাভের উপায়।

জীবনের উদ্দেশ্য মুক্তিলাভ । জানুন মুক্তিলাভের উপায়।


সনাতন ধর্মের লক্ষ্য হচ্ছে জন্ম-মরণ বন্ধন হতে মুক্তি বা মোক্ষলাভ। ব্রহ্মজ্ঞান বা ব্রহ্মপ্রাপ্তি বিনা এই সংসার বন্ধন ছিন্ন করা যায় না। কিন্তু ব্রহ্ম পূর্ণতম এবং শুদ্ধতম সত্তা। সুতরাং ব্রহ্মকে পাইতে হলে বা ব্রহ্মের সহিত মিলিত হইতে হইলে, ব্রহ্মের ন্যায় পূর্ণত্ব বা শুদ্ধত্ব অর্জন করিতে হবে।
অর্থাৎ ব্রহ্মের ন্যায় হইতে পারিলে তবেই ব্রহ্মপ্রাপ্তি অথবা মোক্ষ লাভ বা মুক্তি সম্ভব। তিনি জন্মমৃত্যুরূপ সংসারচক্র হইতে মুক্ত হয়ে অমৃতত্ত্ব লাভ হয় ‌শাস্ত্রসমূহে পুণঃ পুণঃ এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করিয়াছে যে, কেবলমাত্র যাগযজ্ঞ, মন্ত্রতন্ত্রের ও মহাপুরুষদের এবং অবতারের নাম নিলে মুক্তিলাভ করা যাইবে না। 


কেবলমাত্র একমাত্র উপায় হচ্ছে ব্রহ্মসাযুজ্য প্রাপ্তি। এবং ব্রহ্মপ্রাপ্তি ব্যতীত মোক্ষপ্রাপ্তি হয় না। একমাত্র 'আমিই ব্রহ্ম' এই জ্ঞান হইলে তবে মুক্তি লাভ। এখানে ব্রহ্ম 'জ্ঞান' ও ব্রহ্ম 'প্রাপ্তি' পৃথক না, কারণ যিনি ব্রহ্মকে জানেন তিনি ব্রহ্মের ন্যায়ই হন। আবার, ব্রহ্মের ন্যায় শুদ্ধ না হলে 'ব্রহ্মজ্ঞান' বা ''আমিই সেই ব্রহ্ম'' এই আত্মজ্ঞান উদিত হয় না বা নিজের স্বরূপ জানা যায় না।

----শাস্ত্রীয় সূত্র---
★‌ব্রহ্মজ্ঞান না হওয়া পযর্ন্ত মুক্তিলাভ হইবে না।(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্- ৬/৩)



★‌তন্ত্রশাস্ত্রের অন্যতম প্রধান গ্রন্থ মহানির্বাণতন্ত্রে বলা আছে---কলিতে বেদমন্ত্র নিষ্ফল এবং তন্ত্রই একমাত্র সাধন।(২/৭, ১৪-২০) বলিলেও, ব্রহ্মোপাসনা ব্যতীত মোক্ষলাভ হইবে না এবং তাহার জন্য কোনও আচার, নিয়ম, উপবাসের প্রয়োজন নাই (২/৪০, ৫২-৫৫)
‌শত জপ, হোম, উপবাসে মুক্তি হয় না-একমাত্র 'আমিই ব্রহ্ম ' এই জ্ঞান হইলে তবে মুক্তিলাভ হয়। (১৪/১১৫)।


★‌ব্রহ্ম 'জ্ঞান' ও ব্রহ্ম 'প্রাপ্তি' পৃথক্ বোধ নহে, কারণ যিনি ব্রহ্মকে জানেন তিনি ব্রহ্মের ন্যায়ই হন।
‌(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/২/৯। বৃহদারণ্যকোনিষদ--৪/৪/২৫। তৈত্তিরীয় উপনিষদ্-২/১/৩। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-১/৭-৮। কৌষীতকি উপনিষদ্-১/৪।)
★‌ব্রহ্মের ন্যায় শুদ্ধ না হইলে 'ব্রহ্মজ্ঞান' বা 'আমিই সেই ব্রহ্ম '' এই আত্মজ্ঞান উদিত হয় না বা নিজের স্বরূপ জানা যায় না।
‌(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/১/৫। ৩/১/৮-৯। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্-১/৪/১০।)

শ্রী রিগ্যান নাথ