সনাতন ধর্মের লক্ষ্য হচ্ছে জন্ম-মরণ বন্ধন হতে মুক্তি বা মোক্ষলাভ। ব্রহ্মজ্ঞান বা ব্রহ্মপ্রাপ্তি বিনা এই সংসার বন্ধন ছিন্ন করা যায় না। কিন্তু ব্রহ্ম পূর্ণতম এবং শুদ্ধতম সত্তা। সুতরাং ব্রহ্মকে পাইতে হলে বা ব্রহ্মের সহিত মিলিত হইতে হইলে, ব্রহ্মের ন্যায় পূর্ণত্ব বা শুদ্ধত্ব অর্জন করিতে হবে।
অর্থাৎ ব্রহ্মের ন্যায় হইতে পারিলে তবেই ব্রহ্মপ্রাপ্তি অথবা মোক্ষ লাভ বা মুক্তি সম্ভব। তিনি জন্মমৃত্যুরূপ সংসারচক্র হইতে মুক্ত হয়ে অমৃতত্ত্ব লাভ হয় শাস্ত্রসমূহে পুণঃ পুণঃ এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করিয়াছে যে, কেবলমাত্র যাগযজ্ঞ, মন্ত্রতন্ত্রের ও মহাপুরুষদের এবং অবতারের নাম নিলে মুক্তিলাভ করা যাইবে না।
কেবলমাত্র একমাত্র উপায় হচ্ছে ব্রহ্মসাযুজ্য প্রাপ্তি। এবং ব্রহ্মপ্রাপ্তি ব্যতীত মোক্ষপ্রাপ্তি হয় না। একমাত্র 'আমিই ব্রহ্ম' এই জ্ঞান হইলে তবে মুক্তি লাভ। এখানে ব্রহ্ম 'জ্ঞান' ও ব্রহ্ম 'প্রাপ্তি' পৃথক না, কারণ যিনি ব্রহ্মকে জানেন তিনি ব্রহ্মের ন্যায়ই হন। আবার, ব্রহ্মের ন্যায় শুদ্ধ না হলে 'ব্রহ্মজ্ঞান' বা ''আমিই সেই ব্রহ্ম'' এই আত্মজ্ঞান উদিত হয় না বা নিজের স্বরূপ জানা যায় না।
----শাস্ত্রীয় সূত্র---
★ব্রহ্মজ্ঞান না হওয়া পযর্ন্ত মুক্তিলাভ হইবে না।(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্- ৬/৩)
★তন্ত্রশাস্ত্রের অন্যতম প্রধান গ্রন্থ মহানির্বাণতন্ত্রে বলা আছে---কলিতে বেদমন্ত্র নিষ্ফল এবং তন্ত্রই একমাত্র সাধন।(২/৭, ১৪-২০) বলিলেও, ব্রহ্মোপাসনা ব্যতীত মোক্ষলাভ হইবে না এবং তাহার জন্য কোনও আচার, নিয়ম, উপবাসের প্রয়োজন নাই (২/৪০, ৫২-৫৫)
শত জপ, হোম, উপবাসে মুক্তি হয় না-একমাত্র 'আমিই ব্রহ্ম ' এই জ্ঞান হইলে তবে মুক্তিলাভ হয়। (১৪/১১৫)।
★ব্রহ্ম 'জ্ঞান' ও ব্রহ্ম 'প্রাপ্তি' পৃথক্ বোধ নহে, কারণ যিনি ব্রহ্মকে জানেন তিনি ব্রহ্মের ন্যায়ই হন।
(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/২/৯। বৃহদারণ্যকোনিষদ--৪/৪/২৫। তৈত্তিরীয় উপনিষদ্-২/১/৩। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-১/৭-৮। কৌষীতকি উপনিষদ্-১/৪।)
(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/২/৯। বৃহদারণ্যকোনিষদ--৪/৪/২৫। তৈত্তিরীয় উপনিষদ্-২/১/৩। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্-১/৭-৮। কৌষীতকি উপনিষদ্-১/৪।)
★ব্রহ্মের ন্যায় শুদ্ধ না হইলে 'ব্রহ্মজ্ঞান' বা 'আমিই সেই ব্রহ্ম '' এই আত্মজ্ঞান উদিত হয় না বা নিজের স্বরূপ জানা যায় না।
(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/১/৫। ৩/১/৮-৯। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্-১/৪/১০।)
(মুণ্ডকোপনিষদ্-৩/১/৫। ৩/১/৮-৯। বৃহদারণ্যকোপনিষদ্-১/৪/১০।)
শ্রী রিগ্যান নাথ
0 coment rios: